বিশেষ প্রতিনিধি
কালো সাদা ঝকঝক শরীর। হাঁটা চলার সময় গম্ভীর ভাব নিয়ে পা ফেলে ধীরে ধীরে। খুবই শান্ত স্বভাবের। সময়ের সাথে তার আকৃতি বেড়ে উঠা স্বভাবও যেন টাইগারের মতই। তাই নাম রাখা হয়েছে আখাউড়ার টাইগার। নামের সাথে তার আদর যত্নের যেন কমতি নেই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ধাতুর পহেলা গ্রামের প্রবাসী মো. রফিক সরকার (মিন্টু মিয়া) তার মেয়ের নামে রাখা নাইনা খামারে উন্নত জাতের ব্রাহমা বিশাল আকারের এ ষাঁড়টি রয়েছে। বর্তমানে তার ওজন ২৫ মন। নিজ খামারে জন্ম নেওয়া ব্রাহমা জাতের এই গরুটিকে অতি যত্নসহকারে লালন পালন করা হচ্ছে।
বর্তমানে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে এ উপজেলায় এখনো কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেনি। কিন্তু টাইগার নামে এই বিশাল ষাঁড়টি ইতিমধ্যে এলাকাজুড়ে বেশ সারা ফেলেছে। এই গরুটি দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন ও ক্রেতা ভিড় করছেন তার বাড়িতে। গরুটির বয়স প্রায় ৪ বছর। দৈর্ঘ্য প্রায় ৮ ফুট। গরুটির মালিক প্রবাসী মো. রফিক সরকার (মিন্টু মিয়া) এটির দাম হাঁকিয়েছেন সাড়ে ৬ লাখ টাকা। তিনি দাবি করেন এ উপজেলায় কোরবানির পশুর হাটে সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তার এই আখাউড়ার টাইগার নামে গরুটি।
খামার মালিকের ভাই ও ইউপি সদস্য মো. আব্দুল আওয়াল সরকার ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, কোন প্রকার ক্ষতিকর ট্যাবলেট ও ইনজেকশন ছাড়াই সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক খাদ্যে নিয়মিত যত্নে ধীরে ধীরে গরুটিকে বড় করা হয়। খড়, জার্মানি তাজা ঘাস,খৈল ভুষি,চালের কুড়া,ভুট্রা,ভাতসহ পুষ্টিকর খাবার মাধ্যমে লালন পালন করা হচ্ছে।
খামার পরিচর্যাকারী মো. এরশাদ মিয়া বলেন নিয়মিত খাবার, গোসল করানো,পরিস্কার ঘরে রাখা, টাইগারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখা ও রুটিন অনুযায়ী ভ্যাকসিন দেওয়াসহ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। খাবারসহ প্রতিদিন এই গরুটির তলে ৬ শ টাকার উপর খরচ হয় বলে তিনি জানায়। এই খামার দেখাশুনার জন্য ৭-৮ জন লোক কাজ করছেন ।
সরেজমিনে মোগড়া ইউপির ধাতুর পহেলার কুসুমবাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে তুলা হয়েছে গরুর খামার। তার এই বিশাল আকারের গরু খামারে টাইগার ছাড়াও উন্নত জাতের ৪১টি গরু রয়েছে। এরমধ্যে গাভি ৩৩ টি ও ষাঁড় ৮টি রয়েছে। গাভি থেকে প্রতিদিন ১৩৫ কেজি দুধ পাওয়া যায়। গরুগুলোকে অনেক যত্ন করে এগুলো লালন পালন করা হচ্ছে। এ উপজেলায় এখন পযর্ন্ত এটাই হলো সব চাইতে বড় গরু।
পৌর শহরের তারাগন গ্রাম থেকে দেখতে আসা মো. হেলাল মিয়া ও মো. সেন্টু মিয়া বলেন গত বছর আগে স্থানীয় বাজারে সাড়ে ৩ লাখ টাকার গরু দেখেছি। এত বড় গরু দেখিনি। লোকমুখে শুনে গরু দেখতে এলাম।
আখাউড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সার্জন ডা: কামাল বাশার বলেন, উন্নত জাতের গরুটিকে প্রাকৃতিক উপায়ে লালন পালন করা হচ্ছে। যখনই কোন সমস্যায় পড়ছেন সার্বিক ভাবে পরমর্শ দেওয়া হচ্ছে।