
| সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৯ | 2112 বার পঠিত | প্রিন্ট
মহিউদ্দিন মিশু, বিশেষ রিপোর্টার
পূর্বাঞ্চল রেলপথের আখাউড়া রেলসেকশনে
ঢাকা- নোয়াখালীগামী নোয়াখালী এক্সপ্রেস (১২ ডাউন) যাত্রীবাহী ট্রেনের পরিচালক মহিউদ্দিন (৩৩) কে
কসবা থানার এসআই কামাল হোসেন মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কসবা থানার
এসআই কামাল হোসেনসহ ৩ পুলিশ সদস্যকে ক্লোজ করে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে পূর্বাঞ্চল রেলাঙ্গনে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রোববার দিবাগত রাতে আখাউড়া রেলসেকশনের ইমামবাড়ি রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে গার্ড কাউন্সিলের আখাউড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান যুগান্তরকে জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালী গামী যাত্রীবাহী নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রা বিরতির পর রাত ২ টা ৩৩ মিনিটে নোয়াখালীর উদ্দেশ্য আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন ছেড়ে যায়।
পথে মধ্যে রাত ৩ টায় কসবা উপজেলার ইমামবাড়ি রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেন ক্রসিংয়ের জন্য যাত্রা বিরতি দেয়। এসময় ট্রেনের মালবাহী (লাগেজ) বগিতে চুরির ভয়ে ট্রেন পরিচালক এদিক ওদিক টর্চ লাইট মারছিলো। তখন একদল টহল পুলিশ কিছু বুঝে উঠার আগেই ওই ট্রেনের পরিচালককে এলোপাতাড়ি পিটাতে থাকে। টহল পুলিশের এসআই কামাল হোসেনসহ পুলিশ সদস্যরা পরিচালক মহিউদ্দিনকে বেদম ভাবে মারপিট করে।
এ সময় গুরুতর আহত হয় ওই ট্রেন পরিচালক। এসময় তাকে টেনেহিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলার চেষ্টা করে পুলিশ।
কসবা থানার ওসি মোহাম্মদ লোকমান হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ইমামবাড়ি ও মনিয়ন্দ এলাকায় একদল ডাকাত সড়কে ডাকাতি করবে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আখাউড়া থানা এবং কসবা থানা পুলিশ যৌথভাবে ওই এলাকাটি ঘিরে রাখা হয়। এসময় কসবা থানার একদল পুলিশ রেললাইন ধরে উত্তর দিকে ইমামবাড়ি রেলওয়ে স্টেশনের দিকে হেঁটে এগিয়ে যাচ্ছিল। এসময় স্টেশন থেকে কেউ একজন পুলিশের চোখে মুখে বার বার টর্চ লাইটের আলো দিচ্ছিল।
ওসি বলেন, লাইটের আলো মারা নিয়ে তার কাছে জিজ্ঞেস করলে সে উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এসময় উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা বাঁধে। এক পর্যায়ে চোরাকারবারিদের সোর্স মনে করে তাকে টেনেহিঁচড়ে পুলিশ ভ্যানে তোলার চেষ্টা করলে তার পরিচয় দেয় সে ওই ট্রেনের পরিচালক (গার্ড)।পরে ঘটনাস্থলে থাকা আখাউড়া – কসবা সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম হস্তক্ষেপে ট্রেন পরিচালক মহিউদ্দিন ভোর সাড়ে ৪ টায় নোয়াখালীর উদ্দেশ্য ইমামবাড়ি রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যায়। আহত গার্ড মহিউদ্দিন লাকসাম রেলওয়ে জংশন স্টেশনের হেড কোয়াটারের ট্রেন পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ ঘটনায় লাকসাম রেলওয়ে ষ্টেশন মাষ্টার কামরুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, সোমবার ভোরে ওই ট্রেনটি ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল পথের কসবা ইমামবাড়ী রেল ষ্টেশনে দাঁড়ায়। এ সময় কসবা থানা পুলিশ সদস্যরা টর্চ লাইট দিয়ে সিগনাল নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ট্রেন পরিচালক মহিউদ্দিনকে বেদম ভাবে মারপিট করে। এ সময় গুরুতর আহত হয় ওই ট্রেন পরিচালক। পরে তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং বর্তমানে সে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ দিকে রেলমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত সহকারী আতিকুর রহমান জানান, রেল কর্কৃপক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনায় জড়িত পুলিশে এস আই কামাল, কনষ্টেবল মাজেদুল হকসহ ৩জনকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি শ্যামল কান্তি দাস যুগান্তরকে বলেন, এ ঘটনা শুনেছি। তবে রেলওয়ের কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেননি।
Posted ১২:১৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৯
Akhaurar Alo 24 | মোঃ সাইফুল ইসলাম