
| মঙ্গলবার, ০৫ জুন ২০১৮ | 1261 বার পঠিত | প্রিন্ট
বিশেষ প্রতিনিধি: ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাদুকা শিল্প পল্লি। এ শিল্পে কর্মরত শ্রমিকরা যন্ত্রের সাহায্যে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এখানে কর্মরত প্রায় দশ হাজার শ্রমিক সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জুতা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বর্তমানে চীন ও ভারতীয় জুতার সাথে পাল্লা দিয়ে তারা বাহারী ডিজাইনের জুতা তৈরি করছেন। শ্রমিকদের আশা এবার যে পরিমাণে কাজ করছেন তা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে সুন্দরভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরের বিক্রি ভাল হওয়ায় কারখানার মালিকরাও খুশি।
পাদুকা শিল্প সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর পরই এ জেলায় পাদুকা শিল্পের প্রসার ঘটতে থাকে। তিন শতাধিক কারখানায় প্রায় দশ হাজার শ্রমিক এ কাজে নিয়োজিত থেকে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সরেজমিনে দেখা যাত্রীর পৌর শহর সহ আশপাশ এলাকার পীরবাড়ি, বিরাসার, রাজঘরে একাধিক কারখানায় ঘুরে দেখা গেছে, জুতা শ্রমিকরা লেডিস, জেন্টসসহ বিভিন্ন মডেলের জুতা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বছরের অন্যান্য সময় তারা ছয় থেকে সাত ঘণ্টা কাজ করলেও ঈদকে সামনে রেখে তারা চৌদ্দ থেকে পনের ঘণ্টাও কাজ করছেন।
কথা হয় জুতা শ্রমিক সুমন মিয়ার সাথে। তিনি জানান, অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান মাস আসার আগ থেকেই আমাদের কাজের চাপ একটু বেড়ে যায়। এক জোড়া জুতা কয়েকজনের হাত বদল হয়ে তৈরি হয়ে থাকে। কারিগর কম থাকায় কিছুটা চাপ নিয়ে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে।
একজন শ্রমিকের দৈনিক এখন কত টাকা আয় হয় জানতে চাইলে সুজন মিয়া নামে আরেক জুতা শ্রমিক জানান, এমনিতে সিজন ছাড়া আমাদের ৫শ’ টাকা আয় হয়। আর সিজনের সময় প্রতি শ্রমিক দিনে এক থেকে দেড় হাজার টাকাও আয় করতে পারি।
শফিকুর রহমান বলেন, আমরা সকাল ৯টা থেকে রাত প্রায় ৩টা পযর্ন্ত কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিদিন এক থেকে দুই ডজন জুতা তৈরি করছি। ভারতীয় ও চায়না জুতার ডিজাইন দেখে আমরা তাদের মতো জুতা তৈরি করছি। যা বাজারে ব্যাপকভাবে চাহিদা পাচ্ছে।
একাধিক কারখানার মালিক জানান, রমজান মাস আসার সাথে সাথে আমাদের জুতা উৎপাদন দ্বিগুণ হারে বেড়ে যায়। বাহারি ডিজাইনের জুতা তৈরি করে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাসহ কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট, চট্টগ্রাম, রংপুর, বগুড়া থেকে আসা পাইকারদের কাছে বিক্রি করছি।
দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় জেলাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন পাইকাররা এসে লাখ লাখ টাকার জুতা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে কথা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুতা শিল্প সমিতির সভাপতি মো. সফি উদ্দিনের সাথে। তিনি জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক হারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জুতার চাহিদা বেড়েছে। সরকার থেকে আমাদের যদি পৃষ্টপোষকতা দেওয়া হয় তাহলে এ শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছে দেওয়া যাবে।
Posted ৩:৩৩ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৫ জুন ২০১৮
Akhaurar Alo 24 | আখাউড়ার আলো ২৪ ডেস্ক