
| বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০১৯ | 652 বার পঠিত | প্রিন্ট
মহি উদ্দীন মিশু#
৯ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে মনিরা খানম বিথীকে (৩৫) ফিরে পেয়ে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ও ত্রিপুরার আগরতলা স্থলবন্দর নোম্যান্সল্যান্ডে।
হারিয়ে যাওয়া মেয়ে বুধবার দুপুরে ফিরে আসে মায়ের বুকে। বিথীর মা সাফিয়া বেগম (৬০) কে বলেন, ২০১০সালে ভারসাম্যহীন মনিরা খানম বিথী নিখোঁজ হন। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাওয়া যায়নি। তারপরও বিথীর আশা ছাড়েননি তার পরিবার। মাঝেমধ্যে নানা স্থানে খুঁজেছেন তাকে। অবশেষে ভারতের ত্রিপুরার সহকারী হাইকমিশন ও রাজ্যের মডেল সাইক্রেটিক হসপিটাল কর্তৃপক্ষের সহায়তায় পরিবার ফিরে পেলেন মানসিক ভারসাম্যহীন বিথীকে।
বুধবার দুপুর ১২ টা ০৯ মিনিট। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর চেকপোস্ট সীমান্ত পথে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার
কীরিটি চাকমা ও ত্রিপুরা রাজ্যের মডেল সাইক্রেটিক হসপিটালের চিকিৎসক ডা. জ্যোতিময় ঘোষ সরাইল ২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কবিরের কাছে বিথীকে হস্তান্তর করেন। তিনি নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার পাচুয়া গ্রামের মৃত হিমায়েত খন্দকারের মেয়ে।
৯ বছর পর মেয়েকে কাছে পাওয়ার বাঁধভাঙা আনন্দে সকাল থেকেই আখাউড়া সীমান্তের নো-ম্যান্সল্যান্ডে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন
মা সাফিয়া বেগম ও বড় বোন ববিতা খানম।বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের আইনি প্রক্রিয়া শেষে
ত্রিপুরা রাজ্যের সহকারী হাইকমিশনার
কীরিটি চাকমা বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কবিরের কাছে বিথীকে হস্তান্তরের জন্য নিয়ে সীমান্তের নো-ম্যান্সল্যান্ডে যান। এ সময় মা সাফিয়া ও বোন ববিতাকে দেখতে পেয়ে সীমান্ত রেখা ভুলে দৌঁড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে মায়ের বুকে মাথা রেখে পরম আদরে চোখের জলে বুক ভাসালেন মেয়ে বিথী। মনিকা বিথী মাকে জড়িয়ে ধরে চুম্বন করেন। মা-মেয়ের কান্নায় উপস্থিত সবার চোখ পানিতে ভিজে যায়।
ত্রিপুরা রাজ্যের বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার
কীরিটি চাকমা বলেন, সে ২০১০ সালে তার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। তবে ২০১২ সালের ১২ মার্চে ত্রিপুরার ধলাই জেলার সালেমা থানা পুলিশ তাকে ত্রিপুরা রাজ্যের মডেল সাইক্রেটিক হসপিটালে ডা. জ্যোতিময় ঘোষের তত্বাবধানে চিকিৎসাধিন ছিলেন।
ত্রিপুরার রাজ্যের মডেল সাইক্রেটিক হসপিটালে ডা. জ্যোতিময় ঘোষ বলেন, যখন তাকে হাসপাতালে আনা হয় তখন তার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এখন মুটামুটি অনেকটা ভালো। সে তার মা- বোনকে চিনতে পেরেছে। এখানেই আমাদের সার্থকতা। তবে তার জন্য আমাদের অনেক মায়া হচ্ছে।
আখাউড়া-আগরতলা সীমান্তের নো-ম্যান্সল্যান্ডে বুধবার দুপুরে তাকে হস্তান্তরের সময় ২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কবির ছাড়াও ত্রিপুরা রাজ্যের বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের ফাস্ট সেক্রেটারী মো. জাকির হোসেন ভূঁইয়া, সেকেন্ড সেক্রেটারী এসএম আসাদুজ্জামান, কমিশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আশিকুর রহমান, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার রেইনা, আখাউড়া থানার ওসি রসুল আহম্মদ নিজামী, ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
আব্দুল হামিদ, আখাউড়া উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি মহিউদ্দিন মিশু৷ বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ খায়রুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
Posted ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০১৯
Akhaurar Alo 24 | মোঃ সাইফুল ইসলাম