
আহমেদ সামি | বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ | 149 বার পঠিত | প্রিন্ট
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে লাগেজ পার্টির তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে ভারতীয় কাপড়ের ব্যপক চাহিদা থাকায় সামনে রমজানের ঈদ লক্ষ্য করে ভারত থেকে লাগেজে করে আসছে শাড়ি, থ্রি পিস, লেহেঙ্গা, ইমিটেশন আইটেম, কসমেটিক আইটেম সহ বিভিন্ন প্রকার পণ্য।
এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ অবগত থাকলেও কোনো কঠোর ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া পণ্যের মানের মূল্য নির্ধারণ না করে টেক্স নির্ধারণ করছে কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ। তাতে করে সুবিধা পাচ্ছে লাগেজ পার্টি। তবে কাস্টম কর্তৃপক্ষের দাবি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে লাগেজে করে পণ্য পাচারের কোনো সুযোগ নেই। লাগেজে করে কম খরচে ভারতীয় গার্মেন্টস পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করায় এদেশের গার্মেন্টস শিল্পে এর প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
আখাউড়া স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে,স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়া ও কিছু অসাধু কাস্টম কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ভারতীয় এবং বাংলাদেশি ভিসা দ্বারী কিছু নারী-পুরুষ যাত্রী এই ব্যাগেজের পণ্যবাহী লাগেজ নিয়ে বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত প্রবেশ করছে।তবে বাংলাদেশীদের জন্য ভারতীয় ভিসা সীমিত থাকায় ভারতীয় যাত্রীরা লাগেজ নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
গত কিছুদিন থেকে আখাউড়া স্থলবন্দরে লাগেজ পার্টি বেপরোয়া হয়ে উঠছে।ভারত থেকে প্রতিনিয়ত পাসপোর্টধারী যাত্রী বেশে ভারতীয় নাগরিক এসব পণ্য নিয়ে আসছেন পরে বাংলাদেশের একাধিক চক্রের মাধ্যমে এসব পণ্য চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা,চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে,লাগেজ পার্টির সদস্যরা দুইভাবে ভারত থেকে মালামাল নিয়ে আসে। নিজের পুঁজি খাটিয়ে সে টাকায় ব্যাগ ভরে মাল নিয়ে আসে। আবার কেউ কেউ মহাজন অধীনে লাগেজ পার্টি ব্যবসা করে। একেকজন মহাজন ৫,১০ জন করে লাগেজ পার্টির সদস্য রয়েছে। এই সদস্যদের প্রতি ট্রিপে দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দেয়া হয়। এ লাগেজ পার্টির সদস্যরা কলকাতা থেকে বিমান বা ট্রেনে করে আগরতলায় মালামালগুলো নিয়ে আসে তারপর আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান,এর সাথে জড়িত দুদেশের একাধিক প্রভাবশালী চক্র।ব্যক্তি আটক,পোশাক জব্দ জরিমানা আদায়সহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও কিছুতেই থামছে না লাগেজ পার্টি দৌরাত্ম্য।
প্রসঙ্গত গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) শুল্ক ফাঁকি দিয়ে যাওয়ার পথে সাড়ে আট লাখ টাকার ভারতীয় পণ্যসহ ত্রিপুরার রামনগর এলাকার রাহুল মিয়া(২৮) এবং সেলিনা বেগম(৪৫) দুই ভারতীয় নাগরিককে স্থলবন্দর এলাকা থেকে আটক করে বর্ডার গার্ড (বিজিবি) এ সময় তাদের কাছ থেকে ক্রিম,থ্রি পিস,লেহেঙ্গা মদসহ বিভিন্ন পণ্য যদ্ধ করা হয়। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে তারা এসব পণ্য আনেন বলে বিজিবির কাছে স্বীকার করেন।
আখাউড়া স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান,গত দুয়েকদিন ধরে লাগেজ পার্টির তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। তবে এসব পণ্য জব্দ বা জরিমানা করার এখতিয়ার কাস্টম কর্তৃপক্ষের।
আখাউড়া স্থল বন্দরের কাস্টম সুপার রেহানা পারভীন জানান,ট্যাক্সের জায়গা থেকে এবং বৈধতার জায়গা থেকে ও আইনের জায়গা থেকে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করার কারণে এই বিষয়গুলো এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ রাখতে পেরেছি।আমাদের সতর্ক অবস্থানের জন্য ব্যাগেজ থেকে রাজস্ব আদায় হচ্ছে। বিজিবির কাছে শুলকো ফাঁকি দেওয়া ভারতীয় নাগরিকদের আটকের বিষয়ে তিনি বলেন,তারা ইমিগ্রেশন শেষ করে কাস্টমে প্রবেশ না করেই চলে গিয়েছিলেন।
Posted ১০:৩৮ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
Akhaurar Alo 24 | মোঃ সাইফুল ইসলাম