
| শনিবার, ২৯ আগস্ট ২০২০ | 599 বার পঠিত | প্রিন্ট
আশরাফুল মামুনঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় এক কিশোরীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মসজিদের এক ইমামের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হলে সালিশে ওই কিশোরীর পরিবারকে সমাজচ্যুত করে কিছু গ্রাম্য মাতবর। গত ৯ আগস্ট ওই কিশোরীর বাবা আদালতে মামলা করলে আদালত পিবিআইকে মামলার তদন্তভার দেন।মাওলানা ওবায়দুল্লাহ (৫০) নামে ওই ইমাম জেলার নাসিরনগর উপজেলার বড়নগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলার বিশারবাড়ি গ্রামের বড় মসজিদে ইমামতি করতেন। আর ধর্ষণের শিকার কিশোরী স্থানীয় একটি মাদরাসার ছাত্রী।অভিযোগে জানা যায়, ইমাম ওবায়দুল্লাহর কাছে ওই কিশোরীর বাবা শুদ্ধভাবে কোরআন শিখতে মেয়েকে পাঠান। কয়েকদিন মসজিদে পড়িয়ে ইমাম পরে বাড়িতে পড়ানো শুরু করে। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে মেয়েটিকে ‘কুফুরি’ করে মেরে ফেলার ও ‘আল্লাহর’ ভয় দেখিয়ে ফুসলিয়ে ধর্ষণ করে ওই ইমাম। পরে আরও কয়েকদিন তাকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে কাউকে না জানাতে বলে। মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে গত ২৩ জুলাই ওই কিশোরীকে দুটি ট্যাবলেট খেতে বাধ্য করে। ওই রাতেই তার গর্ভপাত ঘটলে মেয়েটি তার পরিবারকে ঘটনা খুলে বলে। এদিকে ইমামও এলাকা ছেড়ে চলে যায়। ঘটনা জানাজানি হলে গ্রামের মাতবররা সালিশের আয়োজন করে কিশোরীকে অপবাদ দিয়ে তার পরিবারকে সমাজচ্যুত করে একঘরে হয়ে থাকতে বলে। সালিশে অধিকাংশ মাতবর ইমামের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। কিশোরীর বাবা বলেন, কথিত সালিশের পর গত ২৮ জুলাই তিনি কসবা থানায় অভিযোগ দায়ের করার ৭ দিন পর তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জিহাদ দেওয়ান বিশারাবাড়ী মসজিদে যান। সেখানে অনেকের সঙ্গে কথা বলে আমাকে ফোন করবেন বলে জানান। তিনি ফোন না করায় আমি ৩ দিন থানায় যাই। থানায় কেউই আমাকে পাত্তা দেয়নি। আমাকে সমাজচ্যুত করায় কোন কাজ কর্ম করতে পারছিনা। দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি। নিরূপায় হয়ে ন্যায় বিচারের আশায় গত ৯ আগস্ট আদালতে মামলা করেছি। আদালত পিবিআইকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। পিবিআই সূত্র গত ২৩ আগস্ট মামলার নথি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে। পিবিআই পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না। সালিশে কিশোরীর পরিবারকে সমাজচ্যুত ও একঘরে করার বিষয়ে জানতে ওই মসজিদ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি হেবজু সর্দার পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেন, তারা গর্ভপাত কেন করলো। এছাড়া কিশোরী যে ইমামের ধর্ষণেই অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিল-তার সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।অভিযুক্ত ইমাম মাওলানা ওবায়দুল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তার মোবাইল ফোনে বার বার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে ওসি লোকমান হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কথা বলবেন না বলে জানান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী পুলিশ কমিশনার (কসবা সার্কেল) মিজানুর রহমান ভূইয়া বলেন, কিশোরী ধর্ষণের মামলার বিষয়ে কোন অভিযোগ তার হাতে আসেনি। আসলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে ইমামসহ জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
Posted ৩:৪৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৯ আগস্ট ২০২০
Akhaurar Alo 24 | সাইফুল ইসলাম