ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সুন্দর বাগান তৈরি, ফুলের সুন্দর ছবি তোলাদের মধ্য থেকে বাছাই করে পুরস্কার দেয়া হয়েছে। বাগান বিলাসী নামে একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে অন্তত ৬০ জনকে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও গাছ দেয়া হয়।
সকালে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার। বাগান বিলাসীর উপদেষ্টা মো. মনির হোসেনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি, সাধারন সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন, সাবেক সাধারন সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পী, ডা. মাহবুবুর রহমান এমিল। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল বাবু, প্রভাষক পঙ্কজ দেব, আশিকুল ইসলাম, রাফসান আহমেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার এক বছরে ৩৮৬ জনকে বাগান করানোয় উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। বিনামূল্যে বিভিন্ন গাছ দেয়া হয়েছে হাজারও মানুষকে। বাগান নিয়েই স্বপ্ন ওদের। ‘লাগাই বৃক্ষ, তাড়াই দু:খ, বাঁচাই দেশ, বাঁচাই পরিবেশ’- এ শ্লোগানটি ফেরি করে তাঁরা।
বাগানের ফেরিওয়ালা তাঁরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একত্রিত হয়ে তাঁরা মানুষকে বাগান করতে আগ্রহী করে তুলছে। একদল তরুণ-তরুণিদের নিয়ে গড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়াভিত্তিক ওই সংগঠনটির কাগুজে নাম দেয়া হয়েছে ‘বাগান বিলাসী’।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার পৈরতলার মোবাশ্বের নামে এক যুবক জানালেন, বাগান বিলাসীর মাধ্যমে তাঁর বাড়িতে এখন ২০-২৫ টি গাছ বেড়ে উঠার পথে। ফেসবুক চালাতে গিয়েই বাগান বিলাসীর কার্যক্রম চোখে পড়ে। তাদের সঙ্গে ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করা মাত্র গাছ পেয়ে অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হন।
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে সদস্য নিয়োগ পাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মো. মাইনুল ইসলাম হাফিজ স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। মাইনুল ইসলাম জানালেন, বাগান বিলাসীর সঙ্গে যোগাযোগের পরই তাঁর বাগান করার আগ্রহ জাগে। এখন তাঁর বাড়িতে গাছের সংখ্যা ৬০টি’র মতো।
উদ্যোক্তারা জানান, ২০১৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর তাঁদের সংগঠনের যাত্রা শুরু। মূলত ফেসবুকে পেজ খোলার মাধ্যমেই তাঁদের এ যাত্রা। শুরু থেকেই তাঁরা বাগান করতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেন ও বিনামূল্যে গাছের চারা বিতরণ করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার অবকাশ নামের একটি পার্কে এক আয়োজনে ১৩০ জনকে গাছের চারা বিতরণের মধ্য দিয়ে তাঁরা প্রথমবারের মতো বড় রকমের আয়োজন করা হয়। পরে সরাইলের একটি কলেজে ১০০ জন শিক্ষার্থীর হাতে, পরবর্তীতে ফুলের ছবির প্রতিযোগিতার আয়োজন করে সেখানেও ৪০ জনকে গাছের চারা দেয়া হয়। এর বাইরে ফেসবুকে যারাই যোগাযোগ করছেন তাদেরকে গাছের চারা দেয়া হচ্ছে। যারা চারা নিচ্ছেন তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে বাগান সম্পর্কে খোঁজ নেয়া হয়।
সংগঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা মো. রাফসান আহমেদ পাভেল বলেন, ‘কাজ করতে গিয়ে যতটুক বুঝেছি যে মানুষ বাগান করতে আগ্রহী। তবে তাঁদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আমরা বিনামূল্যে চারা দেয়াসহ খোঁজখবর নিয়ে বাগানপ্রেমি তৈরি করছি।’
আরেক উদ্যোক্তা মো. আশিকুল ইসলাম বলেন, ‘শুরুতে আমরা সাতজন মিলে সংগঠনটি শুরু করি। নানান কারণেই শুরুর দিকের অনেকেই এখন নেই। তবে নতুন নতুন অনেকে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। গত এক বছরে আমরা যে সাড়া পেয়েছি তাতে আমরা খুবই আনন্দিত। আমরা আশা করছি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রতিটি বাড়িতেই ছোট আকারের হলেও একটি বাগান থাকবে।’